চায়ের উপকারিতা কি ? চা ও কফির মদ্ধ্যে পার্থক্য কি কি

অনেকের দিনের শুরুতে এক কাপ চা না হইলে হয়তো দিনের শুরুটাই হয় না। দিনে ১-২ বার চা খাওয়ার অভ্যাস সবার মধ্যেই আছে। আমরা বলতে পারি চা আমদের ব্যস্তদিনের নিত্যসঙ্গী। আমাদের মাঝে চা এত জনপ্রিয় কারণ, চা এর মধ্যে রয়েছে ক্যাফেইন নামক উপাদান। এই কারণে চা পান করলে আমাদের শরীর ঝরঝরে, ফুরফুরা লাগে। আসুন জেনে নেই চা এর উপকারীতা সম্পর্কে কিছু তথ্য।
চায়ের উপকারিতা কি ? চা ও কফির মদ্ধ্যে পার্থক্য কি কি

ভূমিকা:

চা আমাদের শরীরের বিভিন্ন গঠনের কাজে লাগে। আপনি জানলে অবাক হয়ে যাবেন যে , চা এ এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা আমাদের শরীরের সারাদিনের সব ক্লান্তি দূর করতে পারে। চায়ে থিয়োফিলাইন নামে একটি উপাদান থাকে যেটা শরীরকে কিছুসময় এর জন্য চাঙ্গা করে দেয়।

চায়ের উপকারীতা

স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। চায়ে পুষ্টিগুণ অনেক কম হলেও এতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদানও আছে যেমন , পলিফেনলস, ফ্ল্যাভোনয়েডস , ক্যাটেচিন এবং ক্যাফেইন। চায়ে পলিফেনলসের পরিমাণ ২৫% এরও বেশি থাকে যা দেহের ভিতরে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। আসুন জেনে নেই চা আমাদের শরীরের কি কি উপকারে আসে।

  • ক্যান্সার প্রতিরোধ করে ঃ চা আমাদের শরীরে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভবনা কম রাখে। ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে চিনি ছাড়া চা এবং সবুজ চা খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। লাল চায়ের মধ্যে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রেক্টাল যেটা ত্বক, ব্রেস্ট, জরায়ুর ক্যান্সার , ফুসফুস ও ব্লাডার ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তাই ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে নিয়মিত পরিমান মত চা খাওয়ার অভ্যাস করুন।
  • মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ঃ শরীর ভাল রাখার পাশাপাশি মস্তিষ্ককে সচল রাখতে পারে এক কাপ গরম চা। গরম চায়ে পরিমিত পরিমানে ক্যাফেইন নামক উপাদান থাকে যেটা মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। চায়ে এল-থায়ানিন নামক অ্যামিনো এসিড থাকে যা মস্তিষ্কে উদ্বেগের মাত্রা কমিয়ে দেয়। আর চায়ে ক্যাটেচিন নামক অ্যান্টঅক্সিডেন্ট থাকে যা রক্ত প্রবাহের উন্নতি হতে সাহায্য করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ঃ চা এর মধ্যে থাকা ট্যানিন ফ্লু ও ইনফ্লুয়েঞ্জা আক্রমণ থেকে প্রতিরোধ করে দেহকে সুরক্ষিত রাখে। লাল চা এর মধ্যে থাকা ট্যানিন হজম প্রক্রিয়া সফল হতে সাহায্য করে এবং অন্ত্রের সমস্যা ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার ঠিক হতে সহায়তা করে।

চা ও কফির মদ্ধ্যে পার্থক্য:

প্রতিদিনের ক্লান্তি দূর করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে চা ও কফির মধ্যে থাকা ক্যাফেইন। আবার অতিরিক্ত। মাত্রাই ক্যাফেইন আমাদের শরীর এর জন্য ক্ষতিকর। ৮০ থেকে ১১৫ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে এক কাপ কফিতে। সেই দিক দিয়ে এক কাপ চায়ে ক্যাফেইন এর পরিমান থাকে ১০ থেকে ১৫ মিলিগ্রাম। চা ও কফি দুটিই আমাদের শরীরে একই পরিমান এনার্জি তৈরি করে ।

তবে চা ও কফি একই পরিমাণ শক্তি তৈ করলেও মস্তিষ্কের জন্য চা বেশি কার্যকর । চা এবং কফিতে আছে ট্যানিন ও নানা ধরনের এসিড। চা ও কফি দাঁতের রং পাল্টে দেয় এবং দাঁতের ক্ষয়ক্ষতি করে থাকে। তবে চা-ই দাঁতের ক্ষতিটা বেশি করে থাকে, কারণ কফির তুলনায় চায়ে ট্যানিন বেশি থাকে। চা বা ব্ল্যাক কফি খাওয়ার পর যতটুকু উপকার পাওয়া যায়, ততটুকুই উপকার পাওয়া যায় দুধ চা বা কফিতে দুধ মিশিয়ে খেলে।


ক্যাফেইন শরীরকে ডিহাইড্রেট করে এবং শরীরের তাপমাত্রা বাড়ায়। চায়ে পরিমান মত ক্যাফেইন থাকলেও এক কাপ চায়ের তুলনায় এক কাপ কফিতে অনেক বেশি মাত্রায় ক্যাফেইন থাকে। তাছাড়া এক কাপ কফির চেয়ে এক কাপ চা এর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি।চা ও কফির মধ্যে পার্থক্য দেখা যায় ঘুমের সময়। একদিনে সমান পরিমাণ চা বা কফি গ্রহণকারী ব্যক্তিদের দিনে সজাগ রাখতে দুটিই প্রায় সমান কাজ করলেও রাতে ঘুমানোর যন্ত্রণায় ভোগেন কফি পানকারী ব্যক্তিরা।


চা বা কফি শরীরের প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে । চা ও কফি দুটোই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কফি হৃদরোগ থেকে ভালো ভাবে রক্ষা করে । আবার চা আমাদের শরীরকে ক্যানসার এর হাত থেকে বাচায়।

মন্তব্য: চা ও কফির উভয়ের সুবিধা থাকলেও গরমের দিনে চা-ই উত্তম। উপরের আলোচনায় চা বা কফির কোনটারই ইতিবাচক গুণকে খাটো করে দেখানো নয়। তবে মানতে হবে অবশ্যই কফির চেয়ে চায়ের গুণ কিছুটা বেশি আছে । এখন বাকিটা আপনার নিজের উপরে। 



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url