গর্বাস্থায় ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা

আকর্ষণীয় দেখতে এবং খেতে সুস্বাদু ফলগুলোর মধ্যে ড্রাগন ফল অন্যতম। ড্রাগন ফল খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। কিন্তু এ সকল উপকারিতা আমরা সকলে জানি না। ড্রাগন ফলে থাকা পুষ্টি গুনাগুন আমাদের শারীরিক অনেক উন্নতি করে। প্রিয় পাঠক আসুন জেনে নেওয়া যাক ড্রাগন ফল আমাদের কি কি উপকার করে।
গর্বাস্থায় ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা

এছাড়া এই আর্টিকেলটি আলোচনা করা হয়েছে ড্রাগন ফলের উৎপত্তি, ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম, গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল এর উপকার সম্পর্কে। এই সকল তথ্য সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

ড্রাগন ফলের উৎপত্তি

ড্রাগন একটি মিষ্টি জাতীয় স্বাদের এবং উজ্জ্বল রঙের ফল । এর মিষ্টি স্বাদ এবং উজ্জ্বল রং শতাব্দী ধরে মানুষদের মুগ্ধ করে আসছে। এই ফলটির বাইরের চামড়া দেখতে কিছুটা ড্রাগনের গায়ের মত হয় তাই ফলের নাম ড্রাগন ফল দেওয়া হয়। ড্রাগন ফলের আধিপত্য সর্বপ্রথম আমেরিকা বিশেষ করে মেক্সিকোর অঞ্চলে দেখা যায়। এই ফলটিকে তারা পিটায়া বলে ডাকে যার অর্থ হল খসখসে ফল। এই ফলের পুষ্টি গুনাগুন এবং তার সাধের জন্য এই ফলকে বিশেষ সম্মানে সম্মানিত করা হয়।


১৬ শতাব্দীর প্রথমদিকে ইউরোপীয় যাযাবররা ড্রাগন ফল প্রথমবার খেয়ে থাকেন এবং তার স্বাদ উপলব্ধি করার পর ড্রাগন ফল সাথে করে ইউরোপে নিয়ে যায়। সেখান থেকে গোটা এশিয়া ছড়িয়ে পড়ে এবং ওই দিকের অঞ্চলের আবহাওয়ার সাথে ড্রাগন ফলের গাছ মানিয়ে নেয়। ড্রাগন ফল বেশিরভাগ লাল রংয়ের হয়ে থাকে। তবে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকমের রং দেখা যায়। এই ড্রাগন ফল এখন বিভিন্ন দেশে উৎপাদন হয়ে থাকে। আমাদের দেশেও এখন ড্রাগন ফলের চাষ শুরু হয়ে গেছে।

ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম

ড্রাগন ফল আমরা প্রায় সময়ই হাটে বাজারে দেখে থাকি। ড্রাগন ফল যদিও বিদেশি ফল কিন্তু এখন বাংলাদেশেও বিপুল পরিমাণের চাষ হচ্ছে। এই ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায় যেটা আমাদের শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। দাগ হলে আরো পাওয়া যায় ম্যাগনেসিয়াম, ওমেগা ফ্যাটি এসিড , বিটা ক্যারোটিন ও লাইকোপেনের মতো উপাদান। ড্রাগন ফলটি বিভিন্ন রকম ভাবে খাওয়া যায়।


যেমনঃ ড্রাগন ফল আপনি জুস করে খেতে পারবেন। জুস বানানোর জন্য আপনাকে প্রথমে ড্রাগন ফলের খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে তারপর ব্লেন্ডার মেশিনে জুস বানিয়ে খেয়ে নিতে হবে। এছাড়া আপনি ফলটি সালাদের মত কেটে কেটে খেতে পারবেন। আবার অনেকেই আছে যারা সরাসরি ফলটি খেতে পছন্দ করে যেমন ফলটি কিনে আনার পরে সরাসরি মাঝখান থেকে দুই ভাগ করে কেটে ফেলে তারপর খায় । তবে এই ফল আপনি কখনো রান্না করার সবজি হিসেবে খেতে যাবেন না কারণ আগুনের তাপে এই ফলের সব পুষ্টি গুনাগুন শেষ হয়ে যায়। আর তেমন ভালো স্বাদ নিতে পারবেন না।

ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা

ড্রাগন ফল দেখতে খুব আকর্ষণীয় এবং খেতেও খুব সুস্বাদু। ড্রাগন ফল আগে বাইরের দেশগুলোতে হলেও এখন বাংলাদেশে এর চাষ শুরু হয়ে গেছে। আমরা ড্রাগন ফল অনেকেই খেয়েছি কিন্তু ড্রাগন ফল খাওয়ার হলে কি কি উপকার হয় তা সম্পর্কে হয়তো জানে না। প্রিয় পাঠক পাঠক আসুন জেনে নেওয়া যাক ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে
  • ড্রাগন ফল আমাদের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
  • ড্রাগন ফলের ছোট ছোট ব্রিজগুলো আমাদের হাটের জন্য অনেক উপকারী।
  • ড্রাগন ফলের মধ্যে বিটা ক্যারোটির নামের একটি উপাদান রয়েছে যা আমাদের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখে এবং চোখে ছানি পড়া থেকে দূরে রাখে।
  • ড্রাগন ফল আমাদের শরীরের অভ্যন্তরীণ ক্ষতিকর এবং উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে।
  • নিয়মিত ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে শরীর রক্তশূন্যতাও দূর হতে সক্ষম।
  • ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায় যার ফলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাই।
  • ড্রাগন ফলে থাকা প্রোটিন আমাদের শরীরের বিপাকীয় কাজে সাহায্য করে।
  • ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে যা আমাদের হাড় ও দাঁত মজবুত করে।
  • ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার ও আঁশ থাকে যা আমাদের শরীরের ওজন কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে।
  • ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে যেটা আমাদের শরীরের হিমোগ্লোবিন বাড়িয়ে ফেলে।
নিয়মিত ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে আপনি এরকম উপকার পেয়ে থাকবেন। আমাদের শরীর কে স্বাভাবিকভাবে সুস্থ রাখতে প্রতিদিন নিয়মিত আমাদের ড্রাগন ফল খাওয়া উচিত

গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা

ড্রাগন ফলে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি গুনাগুন রয়েছে। এটি শুধু আমাদের সাধারণ মানুষ নয় গর্ভাবস্থায় মহিলাদেরও অনেক উপকার করে থাকে। এই উপকার গুলির কারণে গর্ভাবস্থায় মেয়েদের ড্রাগন ফল খাওয়া অবশ্যই উচিত। প্রিয় পাঠক আসুন দেখে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা সম্পর্কে।

  • ড্রাগন ফলের মধ্যে সমৃদ্ধ রয়েছে ভিটামিন বি, আয়রন এবং ফোলেট। এইসব পুষ্টিগুণ থাকার কারণে এই ফলটি গর্ভবতী মহিলাদের জন্য একটি আদর্শ ফল। ভিটামিন বি এবং ফোলেট নবজাতকের জন্মের সময় জন্মগত ত্রুটি রোধ করতে সাহায্য করে।

  • ড্রাগন ফল গর্ভবতী নারীদের গর্ভাবস্থায় শারীরিক শক্তি সরবরাহ করে থাকে। 
  • ড্রাগন ফলে থাকে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম যা গর্ভবতী মহিলাদের পোস্টমেনোপজাল এর মতো জটিলতার সমস্যা সমাধান করতে পারে।
  • ড্রাগন ফল আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাই গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল খেলে গর্ভাবস্থায় হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
  • ড্রাগন ফল গর্ভাবস্থায় খাওয়ার ফলে গর্ভাবস্থায় নবজাতকের বৃদ্ধ এবং গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
  • শিশু জন্ম হওয়ার সময় যেন কোন সমস্যা না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে গর্ভবতী মহিলাকে গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ড্রাগন ফল খেতে হবে এতে নবজাতকের জন্ম ত্রুটি রোধ করা যাবে।

গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলারা যদি নিয়মিত ড্রাগন ফল খেয়ে থাকেন তারা এই সকল প্রকার পেয়ে থাকবেন। আর যারা ড্রাগন ফল খেতে চান না তাদের উচিত নিয়মিত ড্রাগন ফল খাওয়ার।

ড্রাগন ফল সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্নঃ ড্রাগন ফলের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কি?

উত্তরঃ অতিরিক্ত ড্রাগন ফল খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলো এলার্জির মত সমস্যা। আপনার যদি এলার্জির সমস্যা থাকে তাহলে ড্রাগন ফল খাওয়ার পরে আপনার জিহ্বা ফুলে যাবে এবং বমি বমি ভাব হতে পারে।

প্রশ্নঃ ড্রাগন ফল কি ত্বকের জন্য ভালো?

উত্তরঃ ড্রাগন ফলের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি এবং বিভিন্ন ধরনের এন্টিঅক্সিডেন্ট এর উৎস। এই উপাদানগুলি আমাদের ত্বকে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। তাই ড্রাগন ফল আমাদের ত্বকের জন্য স্বাস্থ্যকর।

প্রশ্নঃ ডাগন ফল কি একটি সুষম খাদ্য?

উত্তরঃ ড্রাগন ফলকে আপনি সুষুম খাদ্যের মতো ব্যবহার করতে পারবেন। ড্রাগন ফল সালাত হিসেবে এবং বিভিন্ন খাবারের গার্নিশ হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।

প্রশ্নঃ ড্রাগন ফল কতটুকু আয়রণ সমৃদ্ধ?

উত্তরঃ অন্যান্য ফলের তুলনায় ড্রাগন ফলে আয়রনের পরিমাণ একটু কম থাকে। আয়রনের চাহিদা ড্রাগন ফল সম্পন্ন পূরণ করতে পারবে না।

প্রশ্নঃ আমাদের কি প্রতিদিন ডাগন ফল খাওয়া উচিত?

উত্তরঃ ড্রাগন ফল আপনি প্রতিদিন একটি মাত্রায় খেতে পারবেন। ড্রাগন ফলে থাকা পুষ্টি গুনাগুন আপনার শরীরের জন্য নিরাপদ বলে ধরা হয়।

প্রশ্নঃ অপারেশন করার পর কি ড্রাগন ফল খাওয়া যায়?

উত্তরঃ অপারেশন করার পর আপনি চাইলে ড্রাগন ফল খেতে পারেন কিন্তু ড্রাগন ফল খাওয়ার আগে আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ এই ড্রাগন ফল যেন আপনার শরীরের প্রতিকূল প্রক্রিয়া সৃষ্টি না করে।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেল ড্রাগন ফলের বিভিন্ন রকম তথ্য সম্পর্কে যেমন ঃ ড্রাগন ফল এর উৎপত্তি, ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম, ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। এছাড়াও ড্রাগন ফল সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর দেওয়া হয়েছে। ড্রাগন ফল সম্পর্কিত যদি কোন তথ্য আপনার জানার প্রয়োজন থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আমি চেষ্টা করব সেই সম্পর্ক তথ্য তুলে ধরার জন্য।

প্রিয় পাঠক আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন। ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url