৫০ টি আমের জাতের নাম ও আম খাওয়ার উপকারিতা
গরমের সময় আম আমাদের সকলের প্রিয় ফল হয়ে উঠে। পাকা আমের স্বাদের কারনের গরমের তীব্রতা ভুলে যাওয়া সম্ভব। পাকা আম যেমন স্বাদে ভরপুর , তেমনি পুষ্টি গুনাগুনেও ভরপুর। আম আমাদের নানান রকমের উপকার করে থাকে । আসুন জেনে নেওয়া যাক , আম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
এছাড়াও জানতে পারবেন, আম খাওয়ার নিয়ম , ৫০ টি আমের জাতের নাম ও অতিরিক্ত আম খেলে কি হয় তা সম্পর্কে । এই তথ্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল।
আম খাওয়ার নিয়ম
আমরা আমাদের জীবনে যে কোন কাজ নিয়ে নিয়ম মেনে করলে সেটা আমাদের জন্য উপকারী হয়। তেমনি আমরা যদি আম খাওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম ব্যবহার করে থাকি তাহলে আম খাওয়া আমাদের জন্য অনেক উপকারী হবে। নিয়মের বাইরে যদি আম খেয়ে থাকে তাহলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বেশি। তাই আসুন জেনে নেওয়া যাক আম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।
- রাতে খাবার খাওয়ার পর আম খাওয়া উচিত নয় । আমে অনেক পরিমাণ ক্যালোরি থাকে । যেটা রাতে ঘুমানো অবস্থায় হজম হয়না । এর ফলে আমাদের শারীরিক সমস্যা হয় এবং ওজন বেরে যেতে পারে।
- আম খাওয়ার আগে আম ভিজিয়ে রাখুন । কারন আমে ফাইটিক এসিড থাকে , যা আমাদের শরীর এর জন্য ক্ষতিড়ুন
- আম খাওয়ার পরে পানি খাওয়া উচিত নয় , কারন আম খাওয়ার পর পানি খেলে সেই আম গুলো হজম হয় না বা হজম হতে অনেক সময় লেগে যায়।
- আম এবং দই একসাথে খাওয়া উচিত নয়। কারণ আম এবং দই এ থাকা কিছু উপাদান আমাদের শরীর এর মদ্ধে বিসক্রিয়া তৈরি করে.
৫০ টি আমের জাতের নাম
প্রিয় পাঠক আমাদের বাংলাদেশের প্রচলিত আমের অনেক ধরনের নাম রয়েছে, যেগুলো প্রায়ই প্রায় বছরে আমরা দেখেও থাকি এবং খেয়েও থাকি। কিন্তু আমাদের দেশের বাহিরে অনেক প্রজাতির আম রয়েছে যেগুলোর নাম আমরা শুনে নি। প্রিয় পাঠক আসুন জেনে নেওয়া যাক আমাদের দেশ এবং বাহিরের দেশের ৫০ টি আমের জাতের নাম সম্পর্কে।
1. ফজলি
2. আশ্বিনা
3. ক্ষীরমন
4. সেন্দুরা গুটি
5. ল্যাংড়া
6. গৌড়মতি
7. গোপালভোগ
8. মধু চুষকী
9. বৃন্দাবনি
10. লখনা
11. তোতাপুরী (ম্যাট্রাস)
12. রাণী পছন্দ
13. ক্ষিরসাপাত
14. আম্রপালি
15. হিমসাগর
16. বাতাসা
17. ক্ষুদি ক্ষিরসা
18. বোম্বাই
19. সুরমা ফজলি
20. সুন্দরী
21. বৈশাখী
22. িয়ার চারা
23. রসকি জাহান
24. হীরালাল বোম্বাই
25. ওকরাং
26. মালদা
27. শেরীধণ
28. শামসুল সামার
29. বাদশা
30. রস কি গুলিস্তান
31. কন্দমুকাররার
32. নাম ডক মাই
33. বোম্বাই (চাঁপাই)
34. ক্যালেন্ডা
35. রুবী
36. বোগলা
37. মালগোভা
38. হিমসাগর রাজশাহী
39. কালুয়া (নাটোর)
40. চৌষা লখনৌ
41. সিডলেস
42. কালিভোগ
43. বাদশাভোগ
44. কুষ্ণকলি
45. পাটনাই
46. গুটি লক্ষনভোগ
47. বাগান বিলাস
48. গুটি ল্যাংড়া
49. পাটুরিয়া
50. পালসার
আম খাওয়ার উপকারিতা
প্রিয় পাঠক আসুন জেনে নেওয়া যাক আম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কেঃ
- রোগ প্রতিরোধে আমঃ ক্যারোটিনয়েড নামক এই গুরুত্বপূর্ণ উপাদানটি আমের মধ্যে পাওয়া যায়। এই উপাদানটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে দেয়।
- স্মৃতিশক্তি বাড়ায়ঃ আম আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। তাই যারা আমরা ছাত্র বা ছাত্রী আছি তারা সবাই বেশি বেশি করে আম খেতে পারেন এতে স্মৃতিশক্তি বেশি পাবে।
- ত্বকের যত্ন নিতে আমঃ পাকা আমকে বডি স্ক্রাব হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। আমের পিস তৈরি করতে হবে এবং তাতে একটুখানি দুধ আর মধু মিশাতে হবে। তারপর শরীরে আলতো করে ম্যাসাজ করে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলতে হবে দেখবেন ত্বক মসৃণ হয়ে গেছে।
- হিট স্টক ঠেকাবেঃ আম আমাদের সারের আমাদের শরীরের ভেতর থেকে শীতল করে রাখে। এর ফলে আমাদের শরীর গরম কম হয় এবং হিট স্টক হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
- হজমে সাহায্য করেঃ আপনার স্বাস্থ্য সঠিক রাখতে হজম প্রক্রিয়া সুস্থ সুন্দরভাবে পরিচালনা হওয়া জরুরি। আমি থাকা উপাদানগুলো প্রোটিন উপাদান সহজে ভেঙে ফেলতে পারে। এর ফলে খাবার দ্রুত হজম হয় এবং বিভিন্ন রকম সংক্রমণ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
- ভালোবাসা জাগায়ঃ বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞদের মতে তারা বলেন যে, আম খেলে নাকি হৃদয়ে বেশি ভালোবাসার সৃষ্টি হয়। তাই আম কে বিভিন্ন দেশে লাভ ফ্রুট বলা হয়ে থাকে। তাই আমের মৌসুমে প্রিয় মানুষকে অনেক বেশি বেশি আম উপহার দিন।
- চোখের যত্নেঃ আম এ পাওয়া ভিটামিন আমাদের রাতকানা রোগ হওয়ার থেকে মুক্তি দেয়। যারা রাতকানা রোগে ভুগছেন তারা বেশি বেশি আম খেতে পারেন এতে করে আপনাদের সমস্যা সমাধান হয়ে যেতে পারে।
- ক্যান্সার প্রতিরোধঃ আমের মধ্যে বিভিন্ন রকমের এন্টি অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মানব দেহের স্তন ক্যান্সার থেকে শুরু করে কোলন ক্যান্সার এবং প্রোস্টেট ক্যান্সার হওয়া থেকে রক্ষা করে। তাই ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে আমাদের আমের মৌসুমে নিয়মিত আম খাওয়া উচিত।
- কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ আমাদের শরীরের রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরলের নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয় আম। তাই এটা নিয়ন্ত্রণ করতে বেশি বেশি আম খাওয়া উচিত।
- ত্বক ভালো রাখেঃ আমাদের শরীরের ত্বকের ভেতর থেকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। বেশি বেশি আম খেলে আমাদের ত্বকের ফুসকুড়ি দূর হয়ে যায় এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে যায়।
- ওজন কমায় আমঃ আমি বিভিন্ন রকমের পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন পাওয়া যায়। আবার আমি থাকা ফাইবার আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে তুলে। এই সকল কারণে আমাদের শারীরিক ওজন কমে যায়।
অতিরিক্ত আম খেলে কি হয়
বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিসের সমস্যা হয়। বদনাম হতে পারে। পেটে ব্যথার সৃষ্টি হয়। আসুন জেনে নেই অতিরিক্ত আম খেলে কি হয়।
- আমে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি পাওয়া যায়। তাই যারা ডায়াবেটিস রোগী তাদের জন্য অতিরিক্ত আম না খাওয়াই উচিত। তাই অতিরিক্ত না খেয়ে অল্প পরিমাণে আম খাওয়া উচিত।
আরো পড়ুন ঃ আসল মধু চেনার উপায় ও মধু খাওয়ার নিয়ম
- অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে ডায়রিয়ার মত সমস্যা হয়। আমি প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকে, তাই অতিরিক্ত আম খাওয়ার পরে ডাইরিয়া সৃষ্টি হয়।
- অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে শরীরে এলার্জির সৃষ্টি হতে পারে কারণ আমের মধ্যে ইউরিশিয়াল নামক একটি রাসায়নিক পদার্থ পাওয়া যায়। যার কারণে এই পদার্থ শরীরে অতিরিক্ত হয়ে গেলে চুলকানি, ফোসকা পরা এবং ত্বক ফুলে ওঠার মতো সমস্যা হতে পারে।
- অতিরিক্ত আম খাওয়ার ফলে অ্যালার্জি হয়। এলার্জির কারণে শ্বাসকষ্ট, চোখ এবং নাক দিয়ে পানি পড়া, হাচি হওয়া, পেটে ব্যথা অনুভব হওয়া ইত্যাদির মত সমস্যা হয়। এরকম সমস্যা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- যে সকল মানুষদের বাদ জনিত সমস্যা আছে তারা আম অল্প পরিমাণে খাবেন। কারণ অতিরিক্ত আম খেয়ে ফেললে আপনাদের সেই সমস্যা আরও বেশি হতে পারে।
- পরিমাণ মতো আম খেলে আমাদের শরীরের ভেতর ঠান্ডা থাকে। কিন্তু কিন্তু অতিরিক্ত আম শরীরে তাপ বাড়িয়ে দেয়। তাই গরমের মধ্যে অতিরিক্ত আম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
- আম কখনো দুধের সাথে মিশিয়ে খাবেন না কারণ দুধের সাথে আম মিশিয়ে খেলে বদহজম এবং ডায়রিয়ার মত সমস্যা হয়।
- অতিরিক্ত কাঁচা আম খেলে বদহজম বেশি হয় কারণ একটি মাঝারি সাইজের আমের মধ্যে ১৫০ গ্যালারি থাকে। যা আমাদের ওজন বাড়িয়ে দিতে সক্ষম। তাই ওজন কমাতে চাইলে অতিরিক্ত আম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আর্টিকেলটিতে , অতিরিক্ত আম খেলে কি হয় , ৫০ টি আমের জাতের নাম , আম খাওয়ার নিয়ম ও আম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছ । আশা করি আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে । যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url