বায়োমিল ১ বানানোর নিয়ম - বায়োমিল ১ খাওয়ানোর নিয়ম ও দাম কত

অনেক মায়েদের দেখেছি যারা তাদের নবজাতক শিশুকে বুকের দুধের পরিবর্তে বায়োমিল ১ খাওয়াতে। যখন মায়ের বুকের দুধ একটি শিশুর চাহিদা পূরণ করতে পারেনা তখনই সে শিশুকে পাউডার দুধ খাওয়ানো হয়। প্রিয় পাঠক আসুন জেনে নেওয়া যাক বায়োমিল ১ খাওয়ানোর নিয়ম সম্পর্কে।
বায়োমিল ১ বানানোর নিয়ম - বায়োমিল ১ খাওয়ানোর নিয়ম ও দাম কত

এছাড়াও এই আর্টিকেলটি থেকে জানতে পারবেন বায়োমিল ১ বানানোর নিয়ম , বায়োমিল ১ খাওয়ানোর নিয়ম , বায়োমিল ১ খাওয়ানোর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এবং দাম সম্পর্কে । এই সকল তথ্য জানতে মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়ার আনুরোধ রইল।

বায়োমিল ১ বানানোর নিয়ম

বায়োমিল এক প্রস্তুত করার জন্য তেমন কোন পদ্ধতি নেই। তবে আলাদা আলাদা বয়স ভেদে বায়োমিল ১ এর পরিমাণ বেশি দিতে হয়। প্রিয় পাঠক আসুন দেখে নেওয়া যাক বায়োমিল ১ বানানোর নিয়ম।

বায়োমিল প্রস্তুত করতে হলে আপনাকে সর্বপ্রথম একটি পরিষ্কার পাত্রে পরিমাণ মতো পানি গরম করতে হবে। আপনার বাচ্চা যতটুকু পরিমাণে দুধ খেতে পারবে ততটুকুই পানি গরম করুন। তারপর সেই গরম পানি পানিটি হালকা ঠান্ডা করে ফেলুন যেন আপনার বাচ্চার খেতে কোন সমস্যা না হয়। কারণ পানি যদি গরম বেশি হয় তাহলে আপনার বাচ্চার মুখ পুড়ে যাবে। তাই পানি যেন বেশি গরম না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।


তারপর সেই পানি যে পাত্রে বা ফিডারে রাখবেন , সেই পাত্র বা ফিটারটি খুব ভালোভাবে পরিস্কার করে নিতে হবে। অপরিষ্কার কোন কিছুতে আপনার বাচ্চাকে দুধ খাওয়ালে আপনার বাচ্চা অসুস্থ হয়ে যেতে পারে তাই সতর্ক থাকবেন। আপনি যদি ফিডারটি গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নেন তাহলে সবচেয়ে বেশি পরিষ্কার হবে। তারপর ফিডারটিতে পরিমাণ মতো গরম পানি নিন যতটুকু পরিমাণ আপনার আপনার বাচ্চা খেতে পারবে।

বিভিন্ন বয়সের বাচ্চাদের জন্য বিভিন্ন রকম পরিমাণে বায়োমিল খাওয়ানো হয়ে থাকে। যেমন আপনার বাচ্চার বয়স যদি এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে হয় তাহলে ২ থেকে ৩ চামচ খাওয়াবেন। আপনার বাচ্চার বয়স যদি ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ হয় তাহলে বায়োমিল এর পরিমাণ ১ চামচ বাড়িয়ে ৪ চামচ করবেন। আপনার বাচ্চার বয়স যদি দুই মাসের বেশি চলতে থাকে তাহলে অবশ্যই ৫ চামচ করে বায়োমিল খাওয়াবেন। আপনার বাচ্চার বয়স যদি ৩-৪ মাসের বেশি হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই ৬ চামচ খাওয়াবেন এবং ৫-৬ মাসের বেশি বয়স হয়ে গেলে ৭ থেকে ৮ চামচ খাওয়াবেন।

বাচ্চার ফিটারটিতে বাচ্চার বয়স অনুযায়ী বায়োমিল ১ পরিমাণ মতো নিবেন। তারপর সেই পানি এবং বায়োমিল ১ গুড়া দুধটি ভালোভাবে মিশাবেন যেন গুড়া দুধের কোন অংশ গুরা গুড়া ভাব না থাকে। বায়োমিল ১ খেতে বাচ্চার কোন সমস্যা যেন না হয় সেভাবে দুধটি ঝাঁকিয়ে মিশিয়ে নিবেন। এতে আপনার বাচ্চার গলায় দুধ বেধে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকবে না।

বায়োমিল ১ খাওয়ানোর নিয়ম

শিশুর চাহিদা যদি মায়ের বুকের দুধে পূরণ না হয় তাহলে সেই শিশুকে বায়োমিল ১ খাওয়ানো হয়। তবে এই বায়োমিল ১ খাওয়ানোর কিছু নিয়ম রয়েছে যদি আপনি এই নিয়ম মেনে আপনার শিশুকে বায়োমিল ১ না খাওয়ান তাহলে আপনার শিশুর শারীরিক সমস্যা হতে পারে। তাই ২ বায়োমিল খাওয়ানোর আগে খাওয়ানোর নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত। আসুন জেনে নেওয়া যাক বায়োমিল ১ খাওয়ানোর নিয়ম সম্পর্কে।

  • আপনার বাচ্চার বয়স যদি ২ সপ্তাহ হয় তাহলে আপনি তাকে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ বার হালকা গরম পানিতে ২ থেকে ৩ চামচ বায়োমিল ১ মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন। তবে এর অতিরিক্ত যদি হয়ে যায় তাহলে আপনার বাচ্চার যেকোনো ধরনের সমস্যা হতে পারে।

  • আপনার বাচ্চার বয়স যখন একটু বেশি হবে যেমন ৩-৪ সপ্তাহ , তখন পরিমাণে ১ চামচ বাড়িয়ে দিতে হবে এবং বাচ্চাকে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ বার খাওয়াতে হবে।
  • আস্তে আস্তে আপনার বাচ্চার বয়স যখন বৃদ্ধি পাবে বা দুই মাসের অধিক হবে। তখন আপনি আপনার বাচ্চাকে প্রতিদিন কুসুম গরম পানিতে বায়োমিল ১, ৫ চামচ মিশিয়ে দিনে ৫ বার খাওয়াবেন। আপনার বাচ্চাকে অতিরিক্ত পরিমাণে এগুলো খাওয়াবেন না তাহলে হয়তো বা আপনার বাচ্চার কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
  • কোন তিন মাস বয়সী বাচ্চাকে যদি বায়োমিলে ১ খাওয়ানো হয় তবে তাকে প্রতিদিন পাঁচবার ছয় চামচ করে বায়োমিল ১ গরম পানিতে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে।
  • বাচ্চার বয়স যদি ৬ মাস এর অধিক হয় তাহলে তাকে আগের নিয়ম পরিবর্তন করে সর্বমোট ৭ থেকে ৮ চামচ বায়োমিল প্রস্তুত করে খাওয়াতে হবে দিনে পাঁচবার।

এরকমভাবে নিয়ম করে যদি আপনি আপনার বাচ্চাকে বায়োমিল ১ খাওয়ান তাহলে আপনার বাচ্চার মায়ের বুকের দুধের চাহিদা পূরণ হয়ে যাবে। আর নিয়মের বাইরে যদি অতিরিক্ত বায়োমিল ১ খাওয়ান তাইলে আপনার বাচ্চার অস্বাভাবিক কোন সমস্যা হতে পারে।

বায়োমিল ১ খাওয়ানোর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

মায়ের বুকের দুধের পরিবর্তেই একটি বাচ্চাকে বায়োমিল ১ খাওয়ানো হয়। তবে একটি শিশুকে বায়োমিল ১ খাওনের ক্ষেত্রে সব সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ ছোট ছোট শিশুদের শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা অনেক কম থাকে তাই তারা অতিরিক্ত কোন কিছুই সহ্য করতে পারবেনা। শিশুদের কথা চিন্তা করে তাদের অতিরিক্ত কোন কিছুই খাওয়ানো উচিত নয়। খুলনাতে বায়োমিল ১ অতিরিক্ত খাওয়ানোর কারণে একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছিল।


আপনি যদি বায়োমিল ১ পরিমাণ মতো খাওয়ান তাহলে এর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হবে না। কারণ এগুলো শিশুদের জন্য বানানো তাই এগুলো অনেক বিজ্ঞানী রিসার্চ করে বানায় যার ফলে এর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে না। তবে আপনি যদি আপনার শিশুকে অতিরিক্ত বায়োমিল ১ খাওয়ান তাহলে আপনার শিশুটি অসুস্থ হতে পারে। শিশুদের কোন কিছুই অতিরিক্ত খাওয়ানো উচিত নয়। তাহলে শিশুদের ক্ষেত্রে কোন ওষুধ বা বায়োমিল ১ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকবে না।

বায়োমিল ১ দাম কত

আমাদের বাংলাদেশে প্রায় সব জায়গাতে বায়োমিল ১ কিনতে পাওয়া যায়। বায়োমিল ১ এর প্যাকেট বিভিন্ন ওজনে এবং বিভিন্ন দামে পাওয়া যায়। যেমনঃ

পরিমাণদাম
১৮০ গ্রাম২২৫ টাকা
৩৫০ গ্রাম৪৫০ টাকা
৫০০ গ্রাম৮২০ টাকা
১০০০ গ্রাম (১ কেজি)১৬০০ টাকা

পরিশেষে

সদ্য জন্ম হওয়া প্রত্যেকটি শিশুর প্রতি আমাদের যত্নশীল এবং সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। আপনার শিশুর যেন কোনো রকম ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। চেষ্টা করতে হবে তাদের সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে। কারণ শরীরে যেন কোন রোগ হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে। প্রিয় পাঠক , এই আর্টিকেলটিতে বায়োমিল সম্পর্কে বিভিন্ন রকম তথ্য আলোচনা করা হয়েছে। যদি আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং আপনাদের গর্ভবতী বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url